ভূমি অধিগ্রহণ মামলার জেরে অব্যবহৃত পড়ে আছে তিন কোটি টাকার সেতু

প্রকাশঃ Jul 16, 2025 - 12:18
ভূমি অধিগ্রহণ মামলার জেরে অব্যবহৃত পড়ে আছে তিন কোটি টাকার সেতু

ভূমি অধিগ্রহণ মামলার জেরে অব্যবহৃত পড়ে আছে তিন কোটি টাকার সেতু। ভোগান্তিতে ১১ গ্রামের বাসিন্দা। পটুয়াখালী জেলার দশমিনা-বাউফল উপজেলার মধ্যবর্তী বাঁশবাড়িয়া ও বগী বাজার খালের ওপর নির্মিত সেতু নির্মাণের প্রায় ৫ বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে খালের দুই পাড়ের ১১ গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসেন আলী মীর বাসসকে বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলা জটিলতার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’দশমিনা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর দশমিনা-বাউফল উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে ২০১৯-২০২০ সালে দরপত্র আহ্বান করে সেতুটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দরপত্র অনুযায়ী ২০২১ সালে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার ৫০৬ টাকা। বগী বাজার খালের দুই পাড়ে রয়েছে অন্তত ১১টি গ্রাম।আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দশমিনা-বাউফল সীমানাবর্তী বগী বাজার খালের ওপর সেতু নির্মাণের কাজ শেষ। এখন বাকি আছে সংযোগ সড়কের কাজ। আগের রাস্তা থেকে নির্মাণাধীন সেতুটি অনেক উঁচু, সেখান থেকে রাস্তার সংযোগ স্থাপনের জন্য কিছু স্ল্যাব বসিয়ে পারাপার হচ্ছেন দুই পারের মানুষ।ব্রিজের দুই পাড়ের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এর আগে লোহার সেতু (আয়রন ব্রিজ) ছিল। লোহার কাঠামোর ওপর সিমেন্টের স্ল্যাব ছিল। ২০১৯-২০২০ সালে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য পুরোনো সেতুটি ভেঙ্গে ফেলা হয়।

কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অন্তর চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমরা কত যে কষ্টে আছি, হ্যাতো আপনারা নিজেদের চোখেই দ্যাকলেন। ব্রিজ কইরা ফালাইয়া রাখছে, কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সড়কের খবর নাই। এইয়া লইয়া কইতে কইতে মোরা ক্লান্ত অইয়া গেছি।’বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও ব্রিজের পশ্চিম পাশের বাসিন্দা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রায় সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা বয়স্ক ও রোগী এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাত ধরে পার করে দেই। আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে এলাকাবাসীকে বিপদ থেকে মুক্ত করা হোক।এ বিষয়ে বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ জনদুর্ভোগ চরমে। তিনি অনতিবিলম্বে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে এলাকাবাসীর যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।   এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা যাওয়া করেন।এ বিষয়ে এলজিইডির পটুয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসেন আলী মীর জানান, ভূমি অধিগ্রহণ মামলা চলমান থাকায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এখন সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে।