প্রকৌশলীকে লাথি মেরে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি জামায়াত নেতার

কুমিল্লার মুরাদনগরে উপজেলা প্রকৌশলীকে লাথি মেরে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে মাহবুব আলম মুন্সী নামে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে।মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলীর অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ হুমকির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্ত মাহবুব আলম মুন্সী মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি। ২১ সেকেন্ডের ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ তার অফিসের চেয়ারে বসে আছেন। তার কক্ষে কিছু লোকজন বসে আছেন। এ সময় মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুব আলম মুন্সীসহ বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর সঙ্গে উচ্চ বাক্যে কথা বলেন। একপর্যায়ে জামায়াত নেতা মাহবুব প্রকৌশলীকে বলেন- ‘লাথি মেরে তোকে বের করে দেব।’ যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
রাতে অভিযোগের বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুব আলম মুন্সি বলেন, উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসকাইট থেকে প্রান্তি বাজার পর্যন্ত সড়কটির খুবই বেহাল অবস্থা। সেই রাস্তাটির সংস্কারের একটি আবেদন নিয়ে আমিসহ স্থানীয় কয়েকজন মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে যাই। তখন তিনি আবেদনটি দেখে গড়িমসি শুরু করেন। তিনি বলেন- ‘এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব।’ রাস্তাটির সংস্কার খুবই জরুরি- এই বিষয়টি উনাকে বুঝাতে গেলে তিনি আমার সাথে রেগে যান। তিনি বলেন, ‘যদি রাস্তা ভেঙে পানি জমে থাকে তাহলে আপনারা গিয়ে বালতি দিয়ে সে পানি পরিষ্কার করেন। উনি উত্তেজিত হয়ে গেলে, তখন আমিও উত্তেজিত হয়ে যাই।’
পরে আমাদের মুরব্বিরা এসে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে ঘটনাটির সুরাহা করে নেয়। শর্ত অনুযায়ী আমার কাছে কিছু ভিডিও ছিল, তা আমি ডিলিট করে দেই। আসলে ওই ঘটনার সময় আমাদের প্রায় ১০ মিনিট তর্কবিতর্ক হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে মাত্র ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের আমির আ ন ম ইলইয়াস ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে ঘটনাটি হয়েছে সেটি দুঃখজনক। এক পক্ষ থেকে তো আসলে কোনো ঘটনা তৈরি হয় না। যাই হোক বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে সুরাহা করেছি। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণর মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।রাতে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তা সংস্কারের বিষয় নিয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমি তাদের স্থানীয় নেতাদের ডেকেছিলাম। পরে তারা উপস্থিত হয়ে এ বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।