দৌলতদিয়ার সব ফেরিঘাট ভাঙনের হুমকিতে, ঝুঁকিতে তিনটি টার্মিনাল

প্রকাশঃ Aug 5, 2025 - 14:36
দৌলতদিয়ার সব ফেরিঘাট ভাঙনের হুমকিতে, ঝুঁকিতে তিনটি টার্মিনাল

পদ্মা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, যার ফলে দৌলতদিয়ার সব ফেরিঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্য অনুযায়ী, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার সক্রিয় তিনটি টার্মিনাল (নম্বর ৩, ৪ এবং ৭) এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলা হলেও ভাঙনের মাত্রা এতটাই বেশি যে এই ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। তারা জানান, আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম — বাহিরচর সত্তার মেম্বারপাড়া, মজিদ মাতব্বরপাড়া ও শাহাদাত মেম্বারপাড়া — এবং বাজার, মসজিদ, স্কুল ও মাদ্রাসাও এখন হুমকির মুখে।

বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা, যার মধ্যে ছিল আরিচা অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী, শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা জানান, প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে ব্যাপক ভাঙন হয়েছে, বিশেষ করে ৪ ও ৭ নম্বর টার্মিনালের চারপাশে, যেখানে ফেরি পন্টুনগুলো মাটির ক্ষয়জনিত কারণে ক্রমেই অস্থির হয়ে পড়ছে। নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘমেয়াদি নদীশাসন প্রকল্পে বারবার দেরি হচ্ছে। চা বিক্রেতা শাহিন শেখ বলেন, “প্রতিবার বর্ষায় একই সমস্যা হয়, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।” তিনি বালুর বস্তা ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগও তোলেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ মোল্লা, শাহাদাত প্রামাণিক এবং ময়ন সরদার বলেন, তারা ত্রাণ চান না, শুধু কার্যকর নদী ব্যবস্থাপনা চান। তারা বলেন, “আমাদের শেষ আশ্রয়টুকু বাঁচাতে চাই। অনেকেই ভাঙন রোধের আশ্বাস নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কেউ কথা রাখেননি,” বলেন আলতাফ মোল্লা।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, “ভাঙনের কারণে ফেরিঘাটগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আমরা বিআইডব্লিউটিএকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। এখনও তিনটি ঘাট সচল থাকলেও ভাঙন আরও বাড়লে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার ব্যাহত হতে পারে।” বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “৪ ও ৭ নম্বর ঘাট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জরুরি মেরামতের অংশ হিসেবে সম্প্রতি প্রায় ৭০০ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে এখনও টার্মিনালের কেন্দ্রীয় অংশে কোনো বস্তা ফেলা হয়নি। আমরা প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে বাকি কাজ শেষ করতে পারব।”