৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ❑ ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি ❑ বৃহস্পতিবার

ডাকাতি হয়নি কিন্তু থানায় মামলা হয়েছে ডাকাতির 

অনলাইন ডেস্ক, অধিকরণ ডট কম

অধিকরণ অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

বিজ্ঞাপন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  
ডাকাতি হয়নি কিন্তু তুরাগ থানায় মামলা হয়েছে ডাকাতির। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর তুরাগের দলিপাড়া এলাকায়। গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াই টার দিকে দলিপাড়া আনোয়ারা মান্নাফ গার্লস স্কুলের পাশে মুসলেম খানের ৬ তলা বাড়ির ৬ তলায় একটি ফ্লাটে জুয়া খেলা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সিটি এসবি পুলিশের এক সদস্য সেখানে যায় এবং জুয়া খেলা অবস্থায় দরা পরে বেশ কয়েকজন। পরে বিষয়টি সেখানে পুলিশের সাথে বিষয়টি ম্যানেজ করে নেন তারা। পরে রাতে ১৫ লক্ষ টাকা ডাকাতি হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে র্যাব ৪ এর নিকট ৫২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের নেতাকর্মীদের নামে অভিযোগ করলে র্যাব ওই রাতে মামুন নামের একজনকে আটক করেন। এবং তুরাগ থানায় ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি মিথ্যা ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। সাজানো এই মিথ্যা মামলার বাদি বানানো হয় সিকদার বনি আমীন নামের মানি এক্সচেঞ্জ দোকানের কর্মচারীকে। কারন সেদিন জুয়ার আসরে জুয়া খেলছিলেন তার প্রতিষ্ঠানের মালিক রামিম হোসেন।
সিসি টিভির ফুটেজে যে দেখা মেলে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি সেদিন। একজন সিভিল পুলিশ সদস্য কয়েকজন লোককে নিয়ে সে বাড়িতে যায় এবং বেরিয়ে আসে। ঘটনার দিন রাতেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং ভুলভল বুঝিয়ে র্যাব ৪ এর টিমকে দিয়ে মামুন নামের এক যুবলীগ কর্মীকে আটক করিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার দুইদিন পর ২৩ ফেব্রুয়ারী র্যাবের সহায়তায় তুরাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পরের দিন বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে তুরাগ থানা পুলিশ। তদন্তে বেড়িয়ে আসে আসল ঘটনা। ঘটনাস্থল এবং আশেপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা যায় মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে কাজল, ছোট রাজু এবং মামুন একজন সিটি এসবি পুলিশ সদস্যকে সহায়তা করতে তার সাথে ওই ফ্ল্যাটে জান এবং পুলিশ সদস্যের সাথে স্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে আসেন। ১৫ লক্ষ টাকার ডাকাতির এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি সেই বাড়িতে সেদিন। যার সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে মানবকন্ঠের এই প্রতিবেদকের নিকট।
এবং মামলার সাথে ঘটনার কোন প্রকার সত্যতাও পায়নি তুরাগ থানা পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া মামুন দিনের পরদিন সাজানো এই মিথ্যা মামলায় জেল খাটছেন এবং গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে পরিবার ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তুরাগ থানাধীন ৫২ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী রাজু আহাম্মেদ রিজভী, কাজল, ছোট রাজু, তপু সিকদার। বাড়ির কেয়ারটেকার খলিলুর রহমান জানান, সিকদার বনি আমীন উত্তরা আমির কমপ্লেক্স মার্কেটের নিচতলায় মালিহা মানি এক্সচেঞ্জের একজন কর্মচারি । তিনি মুসলেম খানের এই বাড়িতে বেশ কয়েক মাস যাবৎ ভাড়ায় থাকছেন। প্রতিদিন তার বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের লোকজন আসা যাওয়া করতো। ২১ ফেব্রুয়ারী সরকারি বন্ধের দিনে বনি এবং বেশ কিছু লোকজন তার ফ্ল্যাটে তাশ দিয়ে জুয়া খেলছিল হঠাৎ দুপুর দুইটার দিকে সিভিল পোশাকে এসবি পুলিশ সদস্য পরিচয়ে বাড়িতে আসে এবং সাথে এলাকার কয়েকজন লোকজন নিয়ে। পরে আমি সহ ওই এসবির পুলিশ সদস্য বাড়ির ছয়তলায় যাই এবং সেখানে গিয়ে দেখতে পাই সেখানে জুয়া খেলা হচ্ছে। তখন আমার সামনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
তার পর শুনি বাসায় নাকি ডাকাতি হইছে। কেয়ারটেকার খলিলুর রহমান আরো জানান, সিকদার বনি আমীনের এই ফ্ল্যাটে প্রতিদিন মদ খাওয়া সহ জোয়া খেলা হয় যার প্রমান প্রতিবেদকের নিকট রয়েছে। এই বিষয়ে মামলার বাদী সিকদার বনি আমিন নিকট ডাকাতির ১৫ লাখ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলায় যা আছে তাই। আমি কিছু বলতে পারবো না। আমার মালিকের কথা ছাড়া কিছুই বলতে পারবো না। বাসায় জুয়া খেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বাসায় কোন জুয়া খেলা হয় না। আমার আমার মালিক সেদিন তার কিছু বন্ধু বান্ধব নিয়ে আমার ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ী মিটিং করতে আসছিলো। তখনই লোকজন আসে এবং টাকা নিয়ে যায়।
সিকদার বনি আমিনের কথার সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ এবং দেখতে পায় তার মালিক এবং তার বন্ধুদের হাতে যাওয়া এবং আসার সময় কোন টাকা পয়সা ছিলো না। সাজানো এই মামলার বাদী নিজেও জানেন না মুল ঘটনা কি, কিন্তু সাজানো এই মামলায় ঘর ছাড়া ৫২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের বেশ কিছু নেতা কর্মীরা।
এসবির পুলিশকে সহায়তা করতে গিয়ে তাদের থাকতে হচ্ছে ঘর ছাড়া। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা দিয়াবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, এস আই, টিএম আল আমিন জানান, তুরাগ থানাধীন দলিপাড়া এলাকার ডাকাতি সংক্রান্তে একটি মামলা হয়েছে এবং মামলাটি আমি তদন্ত করছি। মামলাটি তদন্তাধীন এবং আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ মামলাটি নিবিড়ভাবে তদারকি করছেন।
বিজ্ঞাপন

সংবাদটি শেয়ার করুন

নিউজলেটার সাবসক্রাইব

জনপ্রিয়

আপনার জন্য আরো কিছু সংবাদ
সম্পর্কিত