১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ❑ ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি ❑ সোমবার

‘এর বাইরে আরো ২৫টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদীর আস্ফালন

অনলাইন ডেস্ক, অধিকরণ ডট কম

অধিকরণ অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

বিজ্ঞাপন

হুমায়ূন মুজিব

শত কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদী। দুর্নীতি দমন কমশিন-দুদকে দাখিল করা এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এ দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

গত ২৪ এপ্রিল ২০২২ইং তারিখে দুদকে ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদীর পদকে অবৈধ এবং শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি তদন্তের জন্য একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) আমাদের প্রতিবেদক হুমায়ূন মুজিবের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্র্রমূলক। দুদকে করা অভিযোগপত্রে তার পদকে অবৈধ বলা হয়েছে- এ প্রসঙ্গে ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, আমি থার্ড গ্রেডে চাকরি শুরু করলেও, আমি প্যাথলজির অধ্যাপক হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করছি। সেই সাথে নিজের দক্ষতা দিয়ে এ পর্যায়ে এসেছি। তিনি কর্মজীবনে মুগদা হাসপাতালে পরিচালক ও প্রিন্সিপাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে প্রিন্সিপাল, ক্যানসার গবেষণা ইন্সস্টিটিউটে পরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন হিসেবে প্রদোন্নতি পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

শত কোটি টাকার দুর্নীতি, ঢাকায় বিল্ডিং, কয়েকটি ফ্ল্যাট, নামে-বেনামে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের শেয়ার, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, পিতা-মাতা, ভাই বোন, শ্বশুড়বাড়ির লোকজনের নামে সম্পদ ক্রয়, ব্যাংক ডিপোজিট, হাসপাতাল করার জন্য ঢাকার আমিনবাজারে পাঁচ বিঘা জমি ক্রয়ের অভিযোগকে অস্বীকার করে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে চাকরি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেবো।

সিরাজগঞ্জে শত বিঘা জমি ও বাড়ি প্রসঙ্গে ডা. শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, এসব জমি ও বাড়ি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত এবং সকল ভাই-বোনদের অংশ। মালেয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম ও কানাডার টরেন্টোতে তার কোন বাড়ি বা অবৈধ সম্পদ নেই জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বলেন, নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটে ফ্ল্যাট থাকা তো দূরের কথা আমেরিকাতে কখনো অবস্থান করেননি। তিনি বলেন, এসব সম্পদ থাকলে আমার বংশধরদের আমি দেশে পড়ালেখা করাতাম না। দেশের বাইরে এসব সম্পদ থাকলে আমার আত্মীয়-স্বজনরা বেনিফিসিয়ারী হতো, তা কিন্তু হয়নি।

মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, বেনামী অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তাই মন্ত্রণালয় এ অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের একটি দালাল সিন্ডিকেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিটালাইজেশন চায় না বলে আমার বিরুদ্ধে আবার দুদকে অভিযোগ করেছে। ডা. সাদী বলেন, মিঠু সিন্ডিকেটের সাথে সর্ম্পক না থাকার পরও তার সাথে জড়িয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। অভিযোগ আছে, মিঠু সিন্ডিকেটের অবৈধ আয়ের তিনি বড় অংশীদার- এ বিষয়ে ডা. সাদীর মত হচ্ছে, মিঠুকে আমি চিনলেও তার সাথে আমার কোন বাণিজ্যিক বা কাজের সর্ম্পক নেই। তিনি বলেন, মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর সেই সর্ম্পক থেকেও নিজেকে সরিয়ে এনেছি।

বিজ্ঞাপন

দুদকে করা অভিযোগ প্রসঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, হ্যা আমি শুনেছি দুদকে কে বা কারা অভিযোগ করেছে, তারা যদি কোন বিষয় বিন্দুমাত্র প্রমাণ দিতে পারে তাহলে সরকারের সিন্ধাস্ত অনুযায়ী যেকোন পদক্ষেপ মেনে নেব। আমি অভিযোগকারীদের বলছি তারা সরাসরি স্বনামে অভিযোগ করুক। আমি সাহসের সঙ্গে তা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট ছিল, যারা স্ববেতনে পদায়ন ও বদলী সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত ছিল, সেই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়ার কারনে একটি মহল বা দুষ্টচক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এসব করছে। তার দাবি, ডাক্তার ও কর্মচারীরা বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল। এখন চারজনের একটি কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে এবং অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে আবেদন বাছাই করে প্রয়োজন অনুসারে বদলির সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। তাছাড়া ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্র্যায়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্যই বদলি ডিজিটাল ফর্র্মে নেয়া হয়েছে।

ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম বলেন, দুর্নীতি করে টাকা কামানোর দরকার নেই। তিনি বলেন, চাকরির বাইরে আমি রাত ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সেবা দিয়ে থাকি। এ বিষয়টি আইনে কাভার করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোন বিধি-নিষেধ নেই। উল্লেখ্য, আইনে ডাক্তারদের অফিসচলাকালীন বাইরে প্র্যাকটিস করার সুযোগ নেই, তবে আইনের ফাঁক -ফোকড় কাজে লাগিয়ে ডাক্তাররা একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ দুঃখজনক। ডা. মোঃ শামিউল ইসলাম পাল্টা অভিযোগ করেন, দুষ্টচক্র আমার পিছনে লেগেছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদটি শেয়ার করুন

নিউজলেটার সাবসক্রাইব

জনপ্রিয়

আপনার জন্য আরো কিছু সংবাদ
সম্পর্কিত