২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ❑ ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১২ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি ❑ মঙ্গলবার

ওয়ালিদ নির্যাতনের ঘটনায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক, অধিকরণ ডট কম

অধিকরণ অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

বিজ্ঞাপন

ওয়ালিদ নিহাদ নির্যাতনের ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কৃত হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ (চার) শিক্ষার্থী। এছাড়াও বাকি যারা জড়িত ছিল তাদেরকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ ও হলের আসন বাতিল করা হয়। সোমবার (৭ মার্চ) বিকাল তিনটায় শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙখলা কমিটির সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে। বিকাল তিনটায় শুরু হয়ে শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষ হয় রাত ১০ টায়। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই সভা।

শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল হক হিমেল, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নাঈম আব্দুল্লাহ (যাযাবর নাঈম), লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মোমেন সরকার, একই বিভাগের তানভির আহমেদ তুহিনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হয়েছে। সাথে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব আগামী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে। সেইসাথে তাদের স্ব-স্ব হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও বাকি ৭ জনকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ ও হলের আসন বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের আবু সোলায়মান নাঈম এর বিষয়ে সতর্কীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে। সেইসাথে তার হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি সারজীল হাসান (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগ), মো. পলাশ (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), জোবায়ের আহমেদ সাব্বির (ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স সায়েন্স বিভাগ) এই তিনজন শিক্ষার্থীকে সতর্কীকরণ পত্র ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে।
মো. ছনিক মিয়া (হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ), মো. মোজাহিদ হোসেন সজিব (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ), মো. সৌরভ হোসেন (পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ) এই তিনজন শিক্ষার্থীর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নং কক্ষের বরাদ্দকৃত আসন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সুপারিশপত্রে আরো বলা হয়, উপরোক্ত সব শিক্ষার্থীর নামে পত্র ইস্যু করা হবে এবং সেই পত্রের কপি সরাসরি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তাদের অভিভাবকের স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করার সুপারিশ করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে এরূপ কার্যকলাপে যুক্ত হলে এবং গৃহীত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোন বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

সভা শেষে উপাচার্য বলেন, তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে নিরপেক্ষতার সাথে সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা কোনো দল বিবেচনা করিনি, আমরা ন্যায়বিচারের প্রশ্নে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আইনত তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। সকল সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই হয়েছে।

এদিকে বহিষ্কৃত চার ছাত্রলীগ কর্মীকে নির্দোষ দাবি করে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত একটি অসংলগ্ন সিদ্ধান্ত। সুষ্ঠু তদন্ত হলে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত আসার কোনো সুযোগই নেই। কেননা ওইদিন রাতে ওই কক্ষে যে ছিলই না, তাকেও শাস্তি দেয়া হয়েছে। ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. মোজাহিদ হোসেন সজিবের আসনও বাতিল করা হয়েছে। অথচ ওইদিন সে ক্যাম্পাসেই ছিল না। এই ধরণের তদন্ত ও সিদ্ধান্ত কখনোই মেনে নেয়া যায় না।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিহাদকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের গ্রুপের রাজনীতি না করায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তোলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে ১৫ জন মিলে ঘটায় এ ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদটি শেয়ার করুন

নিউজলেটার সাবসক্রাইব

জনপ্রিয়

আপনার জন্য আরো কিছু সংবাদ
সম্পর্কিত