বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় বিধি না মেনে এ পর্যন্ত ২৩-২৪টি ইটের ভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। এসব ভাটায় ১২০ ফিট পাকা চিমনি থাকার নিয়ম। কিন্তু বেশির ভাগ ভাটায় তা নেই। টিনের চিমনি থাকায় ভাটার ধোঁয়ায় বসতবাড়িতে টিকে থাকাই দায় হয়েছে। ফলে স্থানীয় মানুষ ভুগছে শ্বাসকষ্টসহ নানান ব্যাধিতে। সেখানে ফলদ বৃক্ষে ফল ধরে না, কৃষিজমিতে ফসল হয় না। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশালের আয়োজনে রহমতপুর মানিককাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এলাকার ইটভাটা এবং বর্তমান পরিবেশগত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
শিক্ষক এইচ এম আবুল কালামের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন। আরও বক্তব্য রাখেন আবদুল্লাহ আল মামুন, এ কে এম শহিদুল ইসলাম, মো. ইউনুচ মোল্লা, রাশিদা আক্তার, মো. শাওন হোসেন, মো. জহির মোল্লা প্রমুখ। বক্তারা বলেন, নদীর কিনারের মাটি ও কৃষিজমির ওপরের স্তরের মাটি কেটে ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে নদী ভাঙনসহ কৃষিজমি দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। কয়লার পরিবর্তে প্রতিটি ভাটায় কাঠ ব্যবহারের কারণে উজাড় হচ্ছে এলাকার বনভূমি। শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণ অসহনীয় মাত্রায় বেড়েই চলেছে। বক্তারা আরও বলেন, যারা এসব অপরিকল্পিত ভাটার বিরুদ্ধে কথা বলে, প্রতিবাদ জানায় ক্ষমতাধর ভাটার মালিকরা তাদের নানা ভাবে নিপীড়ন করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদাসীনতায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা এসব ভাটা মালিকদের সাধারণ জনগণের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই।
এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বক্তারা বেলাকে রহমতপুর ইউনিয়নের বর্তমান চিত্র উচ্চ আদালতে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন’।
সভাপতি এইচ এম আবুল কালাম বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভাটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে তা পরিচালিত হতে হবে আইনি ভাবে। মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে যে সব নিয়মবর্হিভূত ভাটা রহমতপুরে গড়ে উঠেছে তার ইতিবাচক পরিবর্তন চাই। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।