শামসুল বসুনিয়া/ জি আর পারভেজ
জলাবদ্ধতা, যানজট ও বাসযোগ্য মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কে গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। অবলুপ্ত ৪টি খাল কালুনগর, জিরানী, মান্ডা ও শ্যামপুরকে খনন করে এই খালগুলোকে পুনরায় সচল করা হবে। প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ দৈনিক অধিকরণে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকারের কাছে পাঠানো ৪টি প্রকল্প ইতোমধ্যে অনুমোদন পেয়েছে।
এছাড়া আদি বুড়িগঙ্গা মেকানিকাল ইকুইপমেন্টের মাধ্যমে খনন করে সচল করা হচ্ছে যা নগরজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো:
অধিকরণ: এই অর্থবছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা ও ফুটপাতের পরিধি কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী : উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও সবুজায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি স্থাপনা যেমন পরিবর্তন করা হচ্ছে তেমনি পুনরুদ্ধারকৃত খালে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করে তা সুশোভিত করা হচ্ছে। ১০৯.১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা রাস্তা এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে।
অধিকরণ: রাজধানীর অবৈধ দখলের শিকার ৪টি খাল উদ্ধারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: ৪টি খাল পুনরুদ্ধার এবং উন্নয়ন, সৌন্দর্য বর্ধন ও সবুজায়নে মোট ৮শ’ ৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তম্মধ্যে সরকার ৬শ’ ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং ডিএসসিসি নিজস্ব খাত থেকে ২শ’ ৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা যোগান দেবে।
অধিকরণ: নাগরিক জীবনের মানোন্নয়নে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কি ভূমিকা পালন করছে?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: নাগরিক জীবনের মানোন্নয়নে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তার রাজস্ব বৃদ্ধির গতি ক্রমশ: বৃদ্ধি করছে। এ কারণে রাজস্ব আয় যেখানে ৫শ’কোটি টাকা ছিল তা এখন এসে দাঁড়িয়েছে ৭শ’ ৮০ কোটি টাকা। নাগরিক সুবিধা পেতে রাজধানীর অধিবাসীরা কোন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ভোগেন না। প্রতি সপ্তাহে মাননীয় মেয়রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন সেকশনের কাজের গতিহীনতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়।
অধিকরণ: ডিএসসিসি এলাকার মধ্যে শিশুদের জন্য বর্তমানে কতটুকু জায়গা পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ রয়েছে ?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: ডিএসসিসি’র প্রতিটি ওয়ার্ডের উনয়নে ১ কোটি করে ১০০ টি ওয়ার্ডে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থে যেমন সংস্কার কাজ হবে তেমনি শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদন ও শরীর চর্চার উদ্দেশ্যে পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠার কাজও চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও নির্মিত হচ্ছে শহীদ শেখ রাসেলের স্মরণে শেখ রাসেল পার্ক।
অধিকরণ: ঘনবসতি পূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং স্পেস নির্মাণে কোন পরিকল্পনা আছে কি?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: ঘনবসতি পূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং স্পেস নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। এই পার্কিং স্পেস নির্মাণ সম্পন্ন হলে নাগরিক জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে। হ্রাস পাবে যানজট।
অধিকরণ: অবৈধ উচ্ছেদ পরিচালনায় কতটুকু সাফল্য এসেছে?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: অবৈধ উচ্ছেদ পরিচালনা করে ফিরে আসতে না আসতে একটি শক্তিশালী অশুভ শক্তির ছত্রছায়ায় উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা জড়ো হচ্ছে এবং আগের মতো অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ তাদের সমূলে নির্মূল না করা পর্যন্ত তার অভিযান অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।
অধিকরণ: নাগরিক সুবিধা বাড়াতে আপনারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
ডিএসসিসি প্রধান প্রকৌশলী: আমরা কামরাঙ্গীর চরে সিঙ্গাপুরের আদলে বাণিজ্যিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।