স্টাফ রিপোর্টার
গান, কবিতা ও কথার মাধ্যমে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ এমপি। স্মরণানুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লেখক-গবেষক গোলাম কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।
স্মরণানুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি বলেন, পৃথিবীতে এর আগে ও পরে আরো অনেক রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু কাউকে নির্বংশ করে দেয়ার লক্ষ্যে এমন নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যার নজির আর একটিও নেই। এ থেকে বোঝা যায় ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুর রক্তের কোন উত্তরাধিকারকেই বাঁচিয়ে রাখতে চায়নি। আমাদের সৌভাগ্য যে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা সে সময়ে বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে গিয়েছিলেন। অথচ দেখুন ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পর ১৯ বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্টে রাষ্ট্রীয় মদদে ও পৃষ্ঠপোষকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। খালেদা জিয়াকে হত্যার কোন প্রচেষ্টা কি কেউ কখনো করেছে?
লেখক গবেষক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, অনেকেই বলে থাকেন, কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এর মধ্য দিয়ে দুটি লক্ষ্য তারা পূরণ করতে চেয়েছে। একটি হলো, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ২৩ বছরের ধারাবাহিক রাজনৈতিক সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের জিঘাংসা। দ্বিতীয়ত, যে সুনির্দিষ্ট আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে তিনি বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন, সে আদর্শ ও চেতনাকে ধ্বংস করে জাতিকে আবার পাকিস্তানের ভাবাদর্শে ফিরিয়ে নেয়া।
সংস্কৃতি চর্চা প্রতিষ্ঠান উঠোনের শিল্পীদের পরিবেশনা “কাঁদো মানবতা কাঁদো, কাঁদো বিশ্ববিবেক কাঁদো” সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব। এরপর সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী, সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠী, বহ্নিশিখা, মিরপুর সাংস্কৃতিক একাডেমি, পঞ্চভাস্কর, ভিন্নধারা ও সমস্বর -এর শিল্পীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশবরেণ্য গণসঙ্গীত শিল্পী আরিফ রহমান।
এ ছাড়াও আয়োজিত এই স্মরণ অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী, ঝর্ণা আলমগীর ও মাহফুজা আক্তার মিরা।