২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ❑ ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি ❑ সোমবার

ও একটা পাগল ছিলো

অনলাইন ডেস্ক, অধিকরণ ডট কম

অধিকরণ অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

বিজ্ঞাপন

মামুন ওয়াদুদ

কয়েক দিন হলো সাকীর কথা কথা খুব মনে পড়ছে।ওর সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা মনে পড়ছে।আজ সাত বছর হলো ওর সাথে কথা হয় না। কেমন আছে সাকী?ছেলেটা বড্ড পাগল ছিলো জানো? আমি একদিন শিউলি ফুলের মালায় খোপা বাঁধতে চেয়েছিলাম। কাঠগোলাপ আর বাগান বিলাসের শখের কথা বলতেই ছেলেটা দৌড় দিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সাত দিন পর ছেলেটা একগুচ্ছ বাগান বিলাস, কাঠগোলাপ আর একটা শুকনো শিউলি ফুলের মালা হাতে দিয়ে বললো জানো মালিহা এখন শিউলি ফুলের সিজন না। আমি পাহাড়ে গিয়েছিলাম। শুনেছিলাম পাহাড়ে নাকি বারমাসি শিউলি ফুল পাওয়া যায়। আমি পাহাড়ের প্রতিটা ইঞ্চি মাটিতে তোমার জন্য শিউলি ফুল খুঁজেছি। সকল বন বাদাড় খুঁজে শেষমেষ একটা শুকনো মালা এনেছি তোমার জন্য।মালিহা তুমি মন খারাপ করো না।

বিজ্ঞাপন

কথা দিচ্ছি আমি রোজ শিউলি তলায় জল দিবো।

বছরের প্রথম ফোটা শিউলি ফুলে বেধে দিবো তোমার খোপা। সাকী তুমি এমন পাগল কেনো? সাকী বললো জানো মালিহা আমার মা ও আমাকে পাগল বলে।

একবার হয়েছে কি, কোন এক সেমিস্টারের আগে আমার প্রচন্ড জ্বর হলো। আমি হসপিটালে কাতরাচ্ছি।

ও আমার পাশে বসে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

কি করুন দৃষ্টি। হঠাৎ বললো তুমি পরীক্ষা দিতে না পারলে আমি ও দিবো না।এরপর কিছু না বলে হন হন করে বেরিয়ে গেলো। পরে শুনি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। পরীক্ষার হলে বোমা রাখার দায়ে গ্রেফতার হয়েছে তৃতীয় বর্ষের সাকী মাহমুদ। প্রচন্ড পুলিশি নির্যাতনের পর জানা যায় বোমাটি নকল ছিলো। আরেক দিন হয়েছে কি,গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছি।বড় বোনের বিয়ের আয়োজন চলছে বাড়িতে। প্রচুর লোকের আনাগোনা।প্রথম দু সড়ক উঠার পর আমরা বাড়ির মেয়েরা খেতে বসলাম। একটু পর আমার পেছনের চেয়ার থেকে একজন বলছে এই পিচটা মালিহাকে দেন। ও সিনার মাংশ খেতে খুব ভালোবাসে। পেছন ফিরেই দেখি সাকীর বিরহ কাতর চোখে টলমল অশ্রু আর হাতে এক টুকরো সিনার মাংশ।তুমি এখানে কি করো? আর কিভাবে এলে?আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে ও বললো জানো মালিহা তোমাকে ছাড়া থাকতেই পারছিলাম না।

আজ সাত বছর পর সাকীর কথা খুব মনে পড়ছে।কত পাগল ছিলো ছেলেটা।এরপর বিয়ের আসর শেষ হতেই আমাকে নিয়ে পারিবারিক বৈঠক বসলো।ওই ছুটিতেই আমার বিয়ে হয়ে গেল এক আমেরিকা প্রবাসী শিক্ষকের সাথে।কয়েকদিনের মধ্যেই আমেরিকা চলে গেলাম।

সাত বছর পর আজ মোবাইলটা হাতে পেলাম।

বিজ্ঞাপন

ফেসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করতেই দেখি অতিরিক্ত শিউলি ফুল খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাকী মাহমুদ।তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৪। আমার বিয়ের একদিন পর।

বিজ্ঞাপন

সংবাদটি শেয়ার করুন

নিউজলেটার সাবসক্রাইব

জনপ্রিয়

আপনার জন্য আরো কিছু সংবাদ
সম্পর্কিত