২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ❑ ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি ❑ সোমবার

এত দর্শনার্থীর রেকর্ড আর হবে না

অনলাইন ডেস্ক, অধিকরণ ডট কম

অধিকরণ অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন

বিজ্ঞাপন

অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২২ সালের ঈদ আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে সব বয়সী মানুষের কাছে। এত রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থী পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে গিয়েছিল তা বলার মতো না। কোথাও তিল ধরার ঠাঁই ছিল না। যার ফলে প্রচন্ড হিমশিম খেতে হয়েছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো সম্পর্কিত টুরিস্ট পুলিশ হোটেল মোটেল যানবাহন ও ব্যবসায়ীদের ।

চট্টগ্রাম নগরের মধ্যে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত নেভাল, বোট ক্লাব, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, চিড়িয়াখানা, শিশু পার্ক, কাজীর দেউড়ির শিশু পার্ক, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, কর্ণফুলী নদীর তীর, কাট্টলী সৈকত, সিআরবি, ওয়ার সিমেট্রিও মুখর হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের ভিড়ে । এছাড়া ভাটিয়ারি, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের বিনোদনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে। সব বয়সী মানুষের ভিড় জমেছে। খাঁচায় বন্দি বাঘ, সিংহ, হরিণ, জেব্রাসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি দেখে শিশুরা উচ্ছ্বসিত, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। দোলনা, রাইডে উঠে শিশুদের খেলা আর প্রিয়জনদের সঙ্গে ছবি তুলে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া হচ্ছে ।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরের বাইরে পর্যটন শহর হিসেবে খ্যাত কাপ্তাই বিনোদন স্পটগুলোতে এত পর্যটকের আগমন ঘটেছে যা অতীতে দেখা মেলেনি। বিজিবি পরিচালিত প্যানোরোমা জুম রেস্তোরাঁ, নৌবাহিনী পরিচালিত লেক প্যারাডাইস, বন বিভাগের প্রশান্তি, শিলছড়িতে নতুনভাবে নির্মিত নিসর্গ রিভারভ্যালী বিনোদন স্পটে গিয়ে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো । এ ছাড়া বেসরকারি পর্যটনকেন্দ্র বনশ্রী, পাহাড়িকা পিকনিক স্পট, সেনাবাহিনী পরিচালিত লেকশোর ও ‌লেকভিউ, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানেও এত দর্শনার্থী ছিল বলার মতো না । এবার চলুন কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসি ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, এবার ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন কক্সবাজারে দুই লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হচ্ছে। কক্সবাজারের কলাতলী, সুগন্ধা, সীগাল, লাবণী ও কবিতা চত্বর পয়েন্ট হিমছড়ি, ইনানী বীচ, মেরিন রোড, সেন্টমার্টিনে সৈকতে পর্যটকের ঠাসাঠাসি ছিল । ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম অবলীলায় স্বীকার করেছেন , এত পর্যটক হবে তিনি নিজেও ভেবে উঠতে পারেন নাই। এছাড়া ছেড়া দ্বীপ সোনাদিয়া দ্বীপ রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড শাহপরীর দ্বীপ কুতুবদিয়া দ্বীপ রামু রাবার বাগান নিভৃত নিসর্গক পার্ক লামাপাড়া খেয়াং ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক বৌদ্ধ মন্দির ইত্যাদিতে রেকর্ডসংখ্যক দর্শনার্থী ছিল । কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি ছিল পর্যটকদের নিরাপত্তা জন্য। যাতে কোন পর্যটক হয়রানি শিকার না হয়। এই পর্যন্ত এখনো কোনো অভিযোগ আসে নাই। তবে পর্যটকের এত বেশি চাপ ছিল তা বলার মতো না।

পাহাড়ি কন্যা বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি পর্যটক দেখা মিলেছে । মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, তমা তুঙ্গী, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, দেবতাকুম, নাফাকুম, রেমাক্রী, স্বর্ণমন্দির, মিলনছড়ি, চিম্বুক পাহাড়, সাঙ্গু নদী, তাজিনডং, কেওক্রাডং, জাদিপাই ঝরণা, বগালেক, মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স, প্রান্তিক লেক, ঋজুক জলপ্রপাত, নাফাখুম জলপ্রপাত ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থী গিয়েছেন। এছাড়া বান্দরবনে যে কয়েকটি ঘিরে রয়েছে সেখানে পর্যন্ত পর্যটকরা পৌঁছে গেছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, পর্যটকদের যাতে কোন ভোগান্তি না হয় তার জন্য সকল ব্যবস্থা পূর্ব থেকে নেওয়া হয়েছিল । একদিকে লম্বা ছুটি অপরদিকে করোনা মুক্ত ঈদ উৎসব ফলে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে বান্দরবানে। অপরদিকে রূপ বৈচিত্রে ভরপুর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পাহাড়, নদী, ছড়া, ঝিরি ও সমতল ভূমি মিলে এটি একটি অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত এই অঞ্চল। খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, দেবতার পুকুর, হর্টিকালচার পার্ক, তৈদুছড়া ঝর্ণা, বিডিআর স্মৃতিসৌধ, মায়াবিনী লেক, শান্তিপুর অরণ্য কুঠির ইত্যাদিতে হাজার হাজার দর্শনার্থী সমাগম হয়েছে। খাগড়াছড়ি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া এবং সাধারণ সম্পাদক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা মতে, এত বেশি পর্যটকদের জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না । তাদের ধারণার অনেকগুণ বাইরে পর্যটক এসেছে। পাহাড়ের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা সবুজ রূপ বৈচিত্রের শ্যামলভূমি রাঙামাটি জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোতে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের দোলা প্রতিটি মুহূর্তে, যার টানে পর্যটকরা বার বার ফিরে আসে প্রাকৃতিক নৈসর্ঘের লীলাভূমি এ রাঙামাটি জেলায়। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্ণফুলী হ্রদ, পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, উপজাতীয় যাদুঘর, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, যমচুক, রাইংখ্যং পুকুর, নির্বানপুর বন ভাবনা কেন্দ্র, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি, উপজাতীয় টেক্মটাইল মার্কেট, ফুরমোন পাহাড়, নৌ বাহিনীর পিকনিক স্পট, রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু, সাজেক ভ্যালী, আর্যপুর ধর্মোজ্জল বনবিহার, ন-কাবা ছড়া ঝর্ণা, ডলুছড়ি জেতবন বিহার, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, কাট্টলী বিল রাঙ্গামাটি জেলার আকর্ষনীয় দর্শনীয় স্থানে এবারে দর্শনার্থী অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদটি শেয়ার করুন

নিউজলেটার সাবসক্রাইব

জনপ্রিয়

আপনার জন্য আরো কিছু সংবাদ
সম্পর্কিত