ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ঠাঁই পেতে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা

প্রকাশঃ Jul 9, 2025 - 10:59
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ঠাঁই পেতে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা

চলতি সপ্তাহেই জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো তাদের বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় নতুন স্থান সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। তালিকায় স্থান পেতে প্রাগৈতিহাসিক গুহা, দমন-পীড়নের সাবেক কেন্দ্র, বনভূমি, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যসহ আরও বহু ধরনের স্থান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্তি একটি অঞ্চলের জন্য ব্যাপক পর্যটন সুবিধা বয়ে আনতে পারে। একই সঙ্গে এটি সংরক্ষণের জন্য অর্থ সহায়তার পথ খুলে দেয়। বিশেষ করে এমন সব স্থান যেখানে দূষণ, যুদ্ধ বা অবহেলার ঝুঁকি রয়েছে।প্যারিস  থেকে এএফপি জানায়, ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজুলে জানান, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোমবার সংস্থার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ স্থান এখন পানিজনিত গুরুতর সমস্যায় পড়েছে—কখনো জলাভাব, কখনো বন্যা।"যেসব দেশ তাদের মনোনীত স্থানগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, সেগুলোর নাম ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকা’-তে ঠাঁই পায়, এমনকি তালিকা থেকে বাদও পড়তে পারে। বর্তমানে এমন ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় ৫০টির বেশি স্থান রয়েছে।আজুলে বলেন, এইসব অবনমনের প্রায় অর্ধেকই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ঘটে, যার বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত।বর্তমানে ইউনেস্কোর তালিকায় ১,২২৩টি সাংস্কৃতিক, প্রাকৃতিক ও মিশ্র ঐতিহ্য রয়েছে। সংস্থার ১৯৬ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ২৭টি এখনো তালিকার বাইরে রয়েছে, এর বেশ কয়েকটি আফ্রিকার।তবে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের আশা করছে গিনি-বিসাউ ও সিয়েরা লিওন। গিনি-বিসাউ তাদের বিজাগোস দ্বীপপুঞ্জ এবং সিয়েরা লিওন গোলা-টিওয়াই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকা ইউনেস্কোর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানিয়েছে।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের প্রধান লাজার এলুন্ডু আসোমো বলেন, ‘২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অড্রে আজুলে আফ্রিকাকে শুধু তার ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার নয়, বরং ইউনেস্কোর সামগ্রিক অগ্রাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা ইতোমধ্যে এর ইতিবাচক ফলাফল দেখছি।’সাব-সাহারান আফ্রিকার তালিকাভুক্ত স্থান ৯৩ থেকে বেড়ে ১০৮-এ পৌঁছেছে। তবু বিশ্বের তুলনায় এই অঞ্চলের উপস্থিতি এখনো কম।এই বছর ক্যামেরুন মনদারা পর্বতমালার নাম প্রস্তাব করেছে, আর মালাউই মন্ট মুলাঞ্জে স্থানটির তালিকাভুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছে।আফ্রিকার বাইরের মনোনয়নের মধ্যে রয়েছে ইতিহাস-পূর্ব যুগের নানা নিদর্শন। যেমন: ফ্রান্সের পশ্চিমাঞ্চলে কারনাক পাথর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বঙ্গুচিওন স্রোতের ধারে শিলাচিত্র।অদৃশ্য ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য কাম্বোডিয়া আবেদন করেছে খেমার রুজ শাসনামলের সাবেক ‘দমনকেন্দ্র’গুলোর। ইউনেস্কো বলছে, সেগুলো এখন ‘শান্তি ও আত্মচিন্তার স্থান’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে।