স্টাফ রিপোর্টার
আগামী প্রজন্মকে সু-নাগরিক নীতিবান ও দ্বীনদার হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কুরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। জাতীয় শিক্ষাক্রমে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান। বক্তারা বলেন,আলীয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখার স্বার্থে দাখিল পর্যায়ে ৫০০ নম্বরের আরবি শিক্ষা পূর্বের ন্যায় বহাল রাখতে হবে এবং শিক্ষানীতি ও শিক্ষা কারিকুলামে ইসরামী স্কলারদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
শনিবার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স কাকরাইল, ঢাকা মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্তৃক জাতীয় শিক্ষাক্রমে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই আমীর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আরো উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশ্রাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ, গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, জনাব শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, উপ্যাধক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান, ড. তহিদুল হাসান, অধ্যাপক আ আ খ ম ইউনুস, ড. মোহাম্মদ শহিদুল হক, ড. রফিকুল আলম, ড. হানিফ খান, ড. নজরুল ইসলাম মারুফ, ড. জামির হোসেন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আরো যেসব দাবি তুলে ধরেন তা হলো, ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যবইয়ের নাম মূল্যবোধ ও নৈতিকতা কিংবা অন্য কিছু নয়, ইসলাম শিক্ষাই রাখতে হবে। অন্যান্য ধর্মশিক্ষার ক্ষেত্রেও স্ব স্ব ধর্মের নামে থাকতে হবে। ১০ম শ্রেণীতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান এর মতোই ইসলাম শিক্ষা তথাধর্মশিক্ষা বিষয়টিকে সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা পাবলিক পরীক্ষা বা বোর্ড পরীক্ষায় বহাল রাখতে হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, সংগীত এবং গাহস্থ্য বিজ্ঞান শাখায় ইসলাম শিক্ষা বিষয়টিকে পূর্বের ন্যায় কিংবা আগের চেয়েও গুরুত্ব দিয়ে বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং উভয় শ্রেণিতেই বিষয়টিকে বোর্ড পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বার্ষিক পিরিয়ড সংখ্যা বা শিখন-ঘন্টার বিষয়ভিত্তিক বন্টনে ধর্মশিক্ষা, প্রায় সব ক্লাসে যে অবর্ননীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তা পরিপূর্ণরূপে দূর করতে হবে। যে সমস্ত শ্রেণিতে (৯ম থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত) চালর্স ডারউইন-এর অপ্রমানিত বিবর্তনবাদকে পাঠ্য করা হয়েছে, সেই সমস্ত শ্রেণিও পাঠ্য থেকে এই অবৈজ্ঞানিক ও বিতর্কিত তত্ত্ব, যা ধর্মবিরোধ ও নাস্তিক্যবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত,অতি সত্ত্বর তা বাতিল করতে হবে। ২০২৩ থেকে নতুন কারিকুলাম এর আলোকে নতুন পাঠ্য ও সিলেবাস বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেখানে ধর্মশিক্ষার সূতিকাগার তথা মাদরাসা শিক্ষা জন্য আলাদা কারিকুলাম এবং আলাদা পাঠ্যপুস্তক কমিটি করতে হবে। উচ্চ শিক্ষাসহ শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, বুয়েটসহ সব ধরনের ভর্তি পরীক্ষায় এবং বিসিএসসহ সবধরনের চাকুরির পরীক্ষায় সাবজেক্ট ও পরিস্থিতিভেদে ধর্মশিক্ষা বিষয়ে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ শতাংশ প্রশ্ন বা নম্বর বাধ্যতামূলক ভাবেই রাখতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা শিরোনামের অধীনে এ শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের ২৩নং কৌশল হিসেবে ১৭নং পৃষ্ঠায় ব্যক্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শ্রমবাজারে শক্ত অবস্থান তৈরির মাধ্যমে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ ও সুসংহত করতে শিক্ষার প্রতিটি ধারার প্রতিটি শ্রেণিতে আরবি ভাষাশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। –––– সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দুরীকরণে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে হবে।