কাপ্তান বাজারে মুরগি ব্যবসায়ীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
রাজধানীর কাপ্তান বাজারের রাত্রিকালীন পাইকারি মুরগি বাজারে বৈধ ইজারাদার ও তাদের কর্মচারীদের ওপর ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ঢাকা প্যাসিফিক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্বারক নম্বর ৪৬.২০৭.০০০.১৩.০২.৬৯৭১, ২০২৩/৭২৭ (তারিখ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫) অনুযায়ী ওয়ারী থানাধীন কাপ্তান বাজারের রাত্রিকালীন পাইকারি মুরগি বাজার এক বছরের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে বৈধভাবে ইজারা পায় ঢাকা প্যাসিফিক লিমিটেড। তবে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র অবৈধভাবে বাজার দখল করে ইজারা কার্যক্রমে বাধা দিয়ে আসছে।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে দায়িত্ব বুঝে নিতে গেলে এমদাদ পাটোয়ারী, নুরুল ইসলাম ও জুম্মনের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল বাজার বন্ধ করে দেয়। এ সময় ইজারা আদায়ে গেলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিনও একইভাবে বাজার বন্ধ রেখে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হয়।
মো. শাখাওয়াত হোসেন আরও জানান, ২৫ নভেম্বর রাতে ইজারার অর্থ আদায়ে গেলে সন্ত্রাসীরা প্রতিদিন ৬ লাখ টাকা এবং এককালীন ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পাশাপাশি বাজারের প্রায় ২০০টি দোকান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে সেখান থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের শর্ত আরোপ করা হয়। দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানালে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০০ দোকানের মধ্যে সন্ত্রাসীদের দখলে থাকা দুই শতাধিক দোকান বাদ দিয়ে মাত্র ৭০-৮০টি দোকান থেকে ইজারা আদায় সম্ভব হয়েছে। এ সময় একাধিকবার সশস্ত্র হামলায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুরুতর আহত হন।
গত ৭ ডিসেম্বর ভোরে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের হাজিরা অফিস এলাকায় হামলার সময় কর্মচারী মিজানুর রহমান বিল্লালের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১২ ডিসেম্বর ভোরে আরও ভয়াবহ হামলায় শাহজানানসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
এসব ঘটনায় ওয়ারী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে জড়িত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার, কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং বৈধ ইজারা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালুর দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানানো হয়।