মাটি বিক্রির সিন্ডিকেটের বরাদ্দকৃত অর্থে ওসি বদলির হুমকি ; নেপথ্যে ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিক
                                ফ্যাসিবাদের আষ্টেপৃষ্টে বেড়ে ওঠা দুষ্টচক্রের রক্ষাকবচ ও অর্থ উপার্জনের জন্য নামসর্বস্ব অনলাইন পেইজই যথেষ্ট। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রকে ফিরিয়ে নিতে এবং সেই সাথে ফ্যাসিবাদ সমর্থিত সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তিবর্গদের আইনি প্রক্রিয়া মেনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যখন সরকার ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপ যখন উর্ধ্বতনদের প্রসংশা কুড়াচ্ছে ঠিক সেই সময় অনুমেয় নেতিবাচক বিষয়াদি নিয়ে অসমর্থিত তথ্য সূত্রের বরাত দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন ইট ভাটার দালাল সাংবাদিক। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নেতিবাচক দিক ব্যবহারে তৎপর ফ্যাসিবাদের দোসর নামসর্বস্ব চক্রান্তকারীদের নিয়ে গঠিত দুষ্টুচক্র।
আসছে মৌসুমে ইট ভাটার প্রয়োজনে হাজার হাজার ট্রাক মাটির চাহিদা মেটাতে এখনই দুষ্টুচক্রের তৎপরতা শুরু হয়েছে। মাটি বিক্রির দালাল এই চক্রে সম্পৃক্ত রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতা,ট্রাক ব্যবসায়ী, স্কেবেটার বা ভেকুর মালিক, ধামরাই থেকে আশুলিয়া ইউনিয়ন রুটের একাধিক চরিত্র। মাটি খাদক দালাল চক্র সরকারি খাস জমি কেটে সাবাড় করে থাকে নদীর তীরবর্তী অঞ্চল সমূহ।
গত মৌসুমে আনুমানিক লক্ষ ট্রাক মাটির চাহিদা পূরণ করা হয়েছিলো আশুলিয়া ইউনিয়ন এর শেষ সীমানা পাড়াগাঁও নদীর কিনারা এবং মালিকহীন পতিত নিচু জমি থেকে। এখনই কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটায় ইট তৈরি করতে অর্থ লগ্নি শুরু করেছে ভাটা মালিকেরা। নয়ারহাট এলাকার এক যুবদল নেতার অনুসারীরা এ ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। অপরদিকে আশুলিয়া ইউনিয়নে দেখভাল করে থাকেন সাবেক এক সাংসদ এর পিএস। মাঝখানে পুলিশ প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের চোখ বন্ধ রাখতে ফি নির্ধারিত থাকে। যেটির মধ্যস্থতায় রয়েছে রাজবাড়ী জেলার নিবাসী এক টিভি সাংবাদিক। ফ্যাসিবাদের আমল থেকে সাংবাদিকতার আড়ালে অপর সহযোগীদের নিয়ে পেয়ে থাকেন মোটা অংকের বাজেট। গাড়ি প্রতি একটা ফি নির্ধারিত থাকে ব্যক্তির ভূমিকার উপর। সিন্ডিকেটের পক্ষে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করে থাকেন দালাল সাংবাদিক। বিগত বছরে আশুলিয়া থানা তদন্ত ওসি ও সাভার সার্কেলের যোগসাজশে সিন্ডিকেট চালাতেন নয়ারহাটের এক যুবদল নেতা, সাবেক সাংসদ এর পিএস এবং অসাধু সাংবাদিক। সাংবাদিক পুলিশের সমঝোতা ছাড়া এই সিন্ডিকেট চালানো একেবারেই সম্ভব না।
আসছে মৌসুমে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান এবং আশুলিয়া ইউনিয়নের আইসি মাহাবুবুর রহমান কে ইট ভাটায় মাটি সরবারহের বিষয়টি নিয়ে দেনদরবার করতে আসেন অসাধু সেই টিভি সাংবাদিক। ওসি তার অসাধু প্রস্তাবে অসম্মতি জানালেই ভেস্তে যায় সিন্ডিকেটের বিশাল কর্মযজ্ঞ।
ইট ভাটার মালিক পক্ষের নিযুক্ত সাংবাদিক বিষয়টি সিন্ডিকেটকে অবহিত করলে ভাটা মালিকেরা উপায়ান্তর না পেয়ে ওসি বদলির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাংবাদিককে নির্দেশনা প্রদান করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সাংবাদিকপক্ষ তাদের তৎপরতা শুরু করে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যবহারে মাধ্যমে বদলি করে রাজবাড়ী জেলার এক কর্মকর্তাকে আব্দুল হান্নানের স্থলাভিষিক্ত করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার সম্ভব হবে।
ব্যক্তিহীনদের ব্যক্তিত্ববান রুপে এবং ব্যক্তিত্ববানকে ব্যক্তিত্বহীন রুপে অপপ্রচার চালাতে এই দালাল সাংবাদিকেরা সিদ্ধহস্ত।নামসর্বস্ব এই সাংবাদিকেরা ফ্যাসিবাদের শিখিয়ে দেওয়া হতাশার বানী 'আগেইতো ভালো ছিলাম' প্রতিষ্ঠা করতে রাষ্ট্রের ছিদ্র অন্বেষণে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে থাকেন।
স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অবকাঠামো মেরামতের স্বদিচ্ছাকে ইতিবাচক রুপে প্রচার না করে, পুলিশ ও জনগনের বন্ধুত্ব সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে থাকেন। বিগত ফ্যাসিবাদের আমলে শাসকদের শোষক হিসেবে বেড়ে ওঠার পেছনের প্রতিটি রাজ্যসভার সভাসদে ছিলো নামসর্বস্ব এই দালাল সাংবাদিকদের তাবেদারিত্ব।
জুলুমকারীদের মজলুম রুপে সামাজিক স্বীকৃতি প্রদানে এদের প্রচারণা ছিলো জগৎ খ্যাত। রাজ্যের যেসকল স্থানে এদের সংখ্যাধিক্য ছিলো, সে সকল স্থানে জুলুম ছিলো মাত্রাধিক্য। তন্মধ্যে অন্যতম সাভার-আশুলিয়া থানাঞ্চলে। যেখানে সরকারি জমি দখলে গড়ে তোলা হয়েছিলো মাজার সাদৃশ্য কার্যালয়। কার্যসম্পাদনে এটি অব্যবহৃত থাকলেও মাজারের দান বাক্স নিয়মিত খোলা হয়ে থাকতো।
রাষ্ট্র যন্ত্রের অধিনস্ত সকল কর্তাব্যক্তি সহ সকল পেশার মানুষের জান মালের হেফাজতে 'ছাদকায়ে জারিয়া' হিসেবে বৈধ বা অবৈধ উপার্জনের একাংশ তাদের মাজারের দান বাক্সে প্রদান করতে উৎসাহিত করা হতো। মুক্ত হস্তে দান করার আহবানে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে এরা ছড়িয়ে পড়তো প্রতিটি সরকারি /বেসরকারি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানে।
বিরোধীমত দমনে এরা কখনো রাজনীতিবীদের ভূমিকা পালন করতেন আবার কখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের সেবক হিসেবে বিরোধী মত দমনে তাদের অবস্থান সনাক্তকরণে পুলিশের সহায়ক ভূমিকা পালন করতেন।
বৈধ উপার্জনকারীরা ছাদকা দিতেন এবং অবৈধ উপার্জনকারীরা দিতেন মাসোহারা। সভা সেমিনারে তাদের অংশগ্রহণ দর্শকদের অনুপস্থিতির অভাব দূর করতো। সচিত্র প্রতিবেদন ধারণে সক্ষম একটি মুঠোফোনই মাজারের মুরিদ হওয়ার যোগ্যতার অন্যতম মাপকাঠি ছিলো। রাজবাড়ী নিবাসী সাংবাদিকদের নেতৃত্বে চলতো মাজারের কার্যক্রম। রাজনীতিবীদ ও পুলিশের পাশাপাশি এই সকল দালাল সাংবাদিকদের ছাত্র হত্যা মামলায় সম্পৃক্ত করার আইনি দিকগুলো যাচাই-বাছাই করার আহবান জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়াদের পরিবারের অনেকে।
৫ই আগস্ট পরবর্তী বিগত ৬ মাসে আশুলিয়া থানার ৪জন ওসি ও একজন তদন্ত ওসির বদলি এবং ক্লোজ হওয়ার ঘটনা জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
কারণ অনুসন্ধানে ফ্যাসিবাদের আস্থাভাজন ফরিদপুর এবং রাজবাড়ী জেলা নিবাসী দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বদলি আশুলিয়া থানায় হলেও তাদের স্থায়িত্বকাল ছিলো সংক্ষিপ্ত, এক মাস কিংবা তার অধিক।
 ফ্যাসিস্ট গংদের সম্পদ ও ব্যবসা-বানিজ্য রক্ষনাবেক্ষণে তাদেরকে আশুলিয়া থানায় বদলি করানো হয়েছিলো। অর্থের বিনিময়ে বদলি অনায়নে সক্ষম হলেও, তাদের অপেশাদার মানষিকতা এবং ফ্যাসিস্ট কানেকশন অন্যত্র বদলি হতে তাদের বাধ্য করেছিলো।
জলন্ত লাশের স্তুপের পোড়া গন্ধ এবং ফ্যাসিবাদের ঘাপটি মেরে থাকা দুষ্টুচক্রের ষড়যন্ত্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় রাখতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি করার পেছনে ফ্যাসিবাদের সমর্থকদের যোগসূত্র রয়েছে। তাদের নিরাপদ প্রস্থানে সহায়তা প্রদান করতে আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতি করানো হয়ে থাকতে পারে। অবনতির নিম্নগামী সূচকের লাগামটেনে আইনশৃংখলা পরিস্থতির স্থিতিবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পঞ্চম ওসি হিসেবে ২৫শে জুন,২০২৫ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হান্নান।
যোগ্যতাবলে ধ্বংস্তুপ থেকে যাত্রা শুরু করে নিয়মিত পুলিশিং এর পাশাপাশি ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত করে থানার সেবা কার্যক্রম গতিশীল করেছেন তিনি।এছাড়াও দুষ্টুচক্রের সহায়তায় পুলিশের বর্বরোচিত জীবন্ত পুড়িয়ে ছাত্র হত্যার খুনীদের বিচারকে প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণ করতে এবং সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে ওসি আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছেন।
থানার পরিবহন স্বল্পতা,পুলিশ ফাঁড়িগুলো বসবাসের উপযোগী করতে নিজস্ব উদ্যোগে, নিজস্ব অর্থায়নে জনগণের সহযোগিতায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি,জনস্বার্থে,জন সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম তিনি পরিচালনা করে যাচ্ছেন নিয়মিতভাবে ।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী ধার্মিক ও সৎ পুলিশ হিসেবে সুনামের সহিত তিনি সেবামূলক বিভিন্ন জনবান্ধব কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা ও তদারকি করে থাকেন। বিনা মূল্যে পুলিশিং সেবা কার্যক্রম জনমনে ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
দায়িত্বভার গ্রহণের পরপরই ওসি হান্নান অপরাধ দমন, মাদক নির্মূল এবং কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
তিনি হাইওয়েতে নিয়মিত টহল কার্যক্রম নিশ্চিত করায় পরিবহনে ডাকাতি,যানবাহন, মোটরবাইক ছিনতাই, অপহরণ, পথচারীদের চলাচলে নিরাপদ সড়ক এবং ছিনতাই রোধে নিয়মিত টহল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। 
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুরক্ষিত রাখা সহ, জাকসু নির্বাচনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন,সামাজিক অপরাধ দমনে আন্তরিক ভূমিকা তিনি পালন করে যাচ্ছেন।
আশুলিয়া থানার ৫টি আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালিত হয়ে থাকার সংবাদে তিনি হোটেল সমূহে অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ করতে অভিযান চালিয়েছেন এবং ব্যবসা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। জুয়া এবং ব্যভিচার বন্ধে তিনি নিয়মিত টহল ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পাড়া মহল্লায় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রাখতে তিনি নিরবিচ্ছিন্ন পূজা পালনে সনাতনীদের এবং ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ওয়াজ মাহফিল সহ ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন । 
 স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ওসি হান্নানের বিচক্ষণতা, তৎপরতা ও তার দৃঢ় মনোভাবের ফলে আশুলিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনরাবৃত্তি সম্ভব হবে না।  
ওসির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায় যে,৫টি আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যক্রম রোধ , জুয়ার বোর্ড বন্ধ করায় নামসর্বস্ব প্রচার মাধ্যমের কতিপয় অনলাইন সাংবাদিক তাদের সাপ্তাহিক মাসোহারা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার বিভিন্ন ধরনের তদবির বানিজ্য, মামলা বানিজ্যের নামে অনৈতিক এবং আইন বর্হিভূত বিভিন্ন তদবির ফিরিয়ে দেওয়ায় তারা ওসিকে অপসারণের জন্য অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ভাটা মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ অপপ্রচারে ব্যবহার করে যাচ্ছেন। সাধারণ জনগন ফ্যাসিবাদের নামধারী এ সকল সাংবাদিকদের চক্রান্ত রুখে দিতে প্রয়োজনে রাজপথে নামবেন।