ঈদের আগে পাঁচমিশালি মাছের দাম কমেছে, চড়া রইল চিংড়ি ও ইলিশের দাম

Jun 6, 2025 - 15:48
ঈদের আগে পাঁচমিশালি মাছের দাম কমেছে, চড়া রইল চিংড়ি ও ইলিশের দাম

রাত পোহালেই মুসলমানদের ত্যাগ ও আনন্দের ঈদ পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাঁচমিশালি মাছ ও মাংসের দাম কমলে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি ও ইলিশ। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাছের আমদানি ঠিক থাকলেও কমেছে ক্রেতা। অনেক খুচরা ব্যবসায়ী আজকে মাছ কিনতে আসেনি। তাই মাছের দাম তুলনামূলক কম। তবে, ছোট চিংড়ি, টেংরা, বেলে, পুঁটি, পাঙাস, পাবদা, রুই, কাতল, কৈ ও শিং মাছের দাম একটু কম হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গলদা-বাগদা চিংড়ি ও ইলিশ। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাছের আড়ত ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা তথ্য জানা যায়। চিংড়ির দাম বেশি কেন জানতে চাইলে বিক্রেতা জামিউল হক বলেন, চিংড়ি মাছ আমদানি কম। আমরা আগে গলদা চিংড়ি ৮ থেকে ৯০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করেছি, এখন আমদানি কম। আমরাই কিনছি সাড়ে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। তাই ১৫০০ নিচে বিক্রি সম্ভব না। বাগদা চিংড়ি সাড়ে ৭ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি করেছি। বাগদা চিংড়ির আড়তদার সুবাস বলেন, নিয়মিত মাছের দাম বেশি হলেও আজকে খুচরা বিক্রেতা কম থাকায় কেজিতে এক/দেড়শ টাকা কম দামে বিক্রি করছি। আগে গোসা চিংড়ি হাজার টাকার নিচে বিক্রি করতাম না, আজকে ৮০০ টাকায়ও বিক্রি করেছি। গুড়া ও পাঁচমিশালি চিংড়ি ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি। চিরকা, তারা বাইম ও চিংড়িসহ বেশকিছু মাছ বিক্রি করতে না পেরে ফ্রিজে রাখতে হচ্ছে। মাছ কিনতে এসে খুশি ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা প্রত্যাশা করছেন, ঈদের পর থেকে মাছের দাম ঠিকঠাক হতে পারে।

যাত্রাবাড়ী মাছের আড়ত ও বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ কেজিতে ২০ টাকা দাম কমেছে। দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়, যা আগে সাড়ে ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দু-আড়াই কেজি ওজনের কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে, বড় সাইজের ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের কাতল সাড়ে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আগে এসব কাতল সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট বোয়াল ২৮০ টাকা ও বড় বোয়াল ৬০০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কৈ মাছ ২০০-২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাঁচমিশালি (ছোট বাইন, টেংরা, পুঁটি, বাইলা) মাছের কেজি ২৮০ টাকা। এছাড়া ছোট আকারের ইলিশ, ৪-৫টিতে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা। আর একটু বড় আকারের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকায়। ব্যবসায়ী সুলাইমান বলেন, বৃহস্পতিবারের (৫ জুন) তুলনায় আজ ক্রেতার সংখ্যা কম। কিন্তু সেই অনুসারে মাছের সরবরাহ একটু বেশি ছিল। আজও আড়ত অনেকটাই ফাঁকা ছিল। ফলে কম দামে মাছ বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ী মুমিন মিয়া বলেন, ঈদের আগের পাঙাস কিনেছি ১৫০ টাকা কেজিতে, বিক্রি করেছি ১৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আজ কেনা পড়েছে কম দামে, বিক্রি করছি কমে। মাছ কিনতে আসা গৃহিণী হোসনা আক্তার বলেন, কোরবানির ঈদের মধ্যে সবাই তো মাংস খাবেন মাছ খুব একটা কিনতে চাইবে না। তাই ঈদের আগে বাজারে একটু সাশ্রয়ে মাছ কিনতে এলাম। মাছের দাম মোটামুটি কমেছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কমেছে সব ধরনের মাছ ও মাংসের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়া ও চাহিদা কমার কারণে মাছ-মাংসের দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ঈদের আগে দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।