সেরা হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে দেখতে চান মিস্টি খাতুন

সকল বাধা অতিক্রম করে জামালপুরের মেয়ে মিস্টি খাতুন এখন নিজেকে জাতীয় পর্যায়ের একজন অপরিহার্য্য হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ২১ বছর বয়সী মিস্টি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা হ্যান্ডবল দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে নিজের দক্ষতা দিয়ে মিস্টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমানভাবে সকলের নজড় কেড়েছেন। এজন্য তাকে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা দূও করে এগিয়ে যেতে হয়েছে।
মো: আক্কাস আলি ও মোসাম্মৎ লেবুজা বেগমের একমাত্র মেয়ে মিস্টি খাতুন। জামালপুর সদর উপজেলার নারুন্দি ইউনিয়নের খাল পারা গ্রামে তার বাড়ি। নারুন্দি সৈয়দা নাজিবা আক্তার গার্লস হাই স্কুলে পড়ার সময় ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেকে ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
এর মাঝে ২০১৭ সালে জামালাপুল স্পোর্টস একাডেমি স্থানীয় স্টেডিয়ামে মেয়েদের জন্য একটি হ্যান্ডবল ক্যাম্পের আয়োজন করে। ঐ ক্যাম্পে যোগ দিয়ে মিস্টি জেলা দলে খেলার সুযোগ পান।
২০১৮ সালে ঢাকায় শহীদ ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত যুব বাংলাদেশ গেমসে প্রথমবারের মত জামালপুর দলকে প্রতিনিধিত্ব করেন মিস্টি। ঐ আসরে তিনি জামালপুর জেলা দলের অধিনায়ক ছিলেন। যুব গেমসে মিস্টির নেতৃত্বে জামালপুল রানার্স-আপ হয়। লেফট-ব্যাক পজিশনে খেলে মিস্টি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বেশ কয়েকটি ম্যাচে তিনি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পান।
এরপরই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার ডাক আসে। ২০১৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সাউথ এশিয়ান উইমেন্স হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামার যোগ্যতা অর্জণ করেন মিস্টি। এরপর ২০১৯ সালে ভারতের মাটিতে অষ্টম এশিয়ান উইমেন্স ইয়ুথ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশীপে খেলার সুযোগ পান। ২০২২ সালে তুরষ্কে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ নারী হ্যান্ডবল দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন মিস্টি।
ঘরের মাঠেও নিজ জেলা জামালপুরের হয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে নিজেকে হ্যান্ডবল অঙ্গনের একজন অপরিহার্য্য খেলোয়াড় হিসেবে প্রমান করেছেন। ২০২১ সালে নবম বাংলাদেশ গেমসে তিনি জামালপুর জেলার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
বাসস এর সাথে আলাপকালে মিস্টি খাতুন বলেছেন, তিনি হ্যান্ডবলে ক্যারিয়ার গড়তে চান। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের হ্যান্ডবলকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখেন তিনি। ভবিষ্যতে খেলোয়াড়ী জীবন শেষে এদেশের নারী হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে মিস্টি কোচিং ক্যারিয়ারের সাথে নিয়োজিত হবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জামালাপুর জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আফরিন আক্তার মনি বলেছেন, মিস্টি খাতুন তার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস এবং দৃঢ় সংগ্রামের মাধ্যমে হ্যান্ডবলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন, জামালপুরের বিভিন্ন ইভেন্টে নারী খেলোয়াড়দের মিস্টির কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত।