নানা আয়োজনে ওয়ালটনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বৃক্ষরোপণ, বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা অনুষ্ঠান, ই-পার্মিট সিস্টেম উদ্বোধনসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। আজ বুধবার গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টারে জমকালো আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে।ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র এনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেফটি (ইএইচএস) বিভাগের উদ্যোগে গত ২৯ মে থেকে ওয়ালটন হেড কোয়ার্টারে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন কার্যক্রম শুরু হয়। এরই মধ্যে স্থানীয় স্কুলে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, ওয়ালটনের মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঝে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ, প্লাস্টিক কালেকশন সহ বেশ কিছু কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ওয়ালটনের রাজপথ। র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ আলী, ইএইচএস বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাজুসহ হেডকোয়ার্টারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।র্যালি শেষে হেডকোয়ার্টার প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করা হয়। এরপর পরিবেশ রক্ষায় করণীয় ও ওয়ালটনের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগসহ নানা বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।ওয়ালটনের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ আলী বলেন, “বিশ্ব জুড়ে পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হলো প্লাস্টিকের ব্যবহার। দিন দিন আমাদের ব্যবহারের সমস্ত জিনিসেই প্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। আর তারই খেসারত গুনতে হচ্ছে পরিবেশকে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, প্লাস্টিক ব্যবহার না কমলে মানুষকেও এর খেসারত দিতে হবে। এমনিতেই গ্ৰিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বাড়ায় বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ছে। তার উপর আরেক আতঙ্কের নাম প্লাস্টিক। পরিবেশের সঙ্গে এই বর্জ্য পদার্থ মেশে না বলেই ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।”ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির প্রশাসন বিভাগীয় প্রধান মেজর জাহিদুল হাসান (অব.) প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় রোধ করে টেকসই উন্নয়নের বিষয়ে উপস্থিত সকলের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, “নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে হবে। বায়ু বা পানি দূষণের কারণে পরিবেশকে দূষিত করে তোলার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে পারে। সকল প্রকার শক্তি এবং পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অপচয় রোধ করতে হবে।”ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিনূর সুলতানা বলেন, “পরিবেশ আমাদের অনেক মূল্যবান কিছু উপহার দিলেও বিনিময়ে আমরা পরিবেশকে উপহার হিসেবে দিচ্ছি বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, সিসা, দূষিত নোংরা পানি, অপরিশোধিত বর্জ্য। পরিবেশ দূষণ ঠিক কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে তা ঘর থেকে বেরোলেই আমরা অনুধাবন করতে পারি। পরিবেশ রক্ষায় ওয়ালটন নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। একটি সুন্দর আবাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।” তিনি প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যের পরিবর্তে দেশীয় পাট শিল্পজাত পণ্য ব্যবহারের প্রতি সবাইকে উৎসাহিত করেন।
ইএইচএস বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, “ওয়ালটন দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার, গাছ রোপণ করা, পানির অপচয় কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, গ্রিন বিল্ডিং স্থাপন, রিসাইকেল ও পুনঃব্যবহারযোগ্য করে মালামাল ব্যবহার করা, তরল বর্জ্য শোধন করে পুনরায় ব্যবহার করা, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে কাগজের ব্যবহার কমানো, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।”
তিনি বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে আরো বলেন, “গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও বায়ুদূষণের কারণে বাস্তুতন্ত্র প্রভাবিত হচ্ছে। তাই বাস্তুতন্ত্র ভালো রাখার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। বর্জ্য পদার্থ রিসাইকেল করতে হবে। কাঁচ, প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম বা খবরের কাগজ ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে রিসাইকেল করা প্রয়োজন। এর ফলে এই বর্জ্যগুলো পোড়ানোর ফলে নির্গত ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি করতে পারবে না।”র্যালি ও আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ওয়ালটন হেডকোয়ার্টারে কাগজের ব্যবহার কমাতে ‘ই-পার্মিট সিস্টেম’র উদ্বোধন করা হয়। এরপর পরিবেশ ও জৈব বৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবং স্লোগান, আইডিয়া প্রদান প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।এছাড়াও পোনামাছ অবমুক্তকরণ, ওয়ালটন এগ্রিকালচার সেকশনের উদ্যোগে বৃক্ষ প্রদর্শনী এবং উপস্থিত অতিথিদের মাঝে ‘লাইফ সেভিং কার্ড’ বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির রেফ্রিজারেটর উৎপাদন বিভাগীয় প্রধান মো. নাসির উদ্দীন, টিভি প্রোডাক্টের ডিসিবিও (ডেপুটি চিফ বিজনেস অফিসার) কাজি মো. হাসিবুল হক, কম্প্রেসার উৎপাদন বিভাগীয় প্রধান মো. রিজওয়ান আজিজ, প্যাকেজিং সেকশন ইনচার্জ মো. মাইদুল ইসলাম, গ্লাস প্রসেস অ্যান্ড প্রিন্টিং সেকশন ইনচার্জ মো. শাহরিয়ার কবির, ওয়ালটন ডিজি-টেক কর্পোরেশনের মানবসম্পদ বিভাগীয় প্রধান বিবেকানন্দ সরকার, ইএইচএস বিভাগের মো. রায়হান ও মো. মাহফুজ হোসেন, ইটিপি ইনচার্জ মো. তাজমির হাসান, ফায়ার সেইফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশন ইনচার্জ মো. ইশাদুল ইসলাম এবং পিসিএম ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলামসহ ইএইচএস বিভাগের সকল কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় করেছে ইএইচএস টিম, ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স।