খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে তদন্তে ধীরগতি

প্রকাশঃ Jun 15, 2025 - 17:39
খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে তদন্তে ধীরগতি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তৎকালীন এমপি, মন্ত্রী ও অন্য নেতাদের পছন্দের কর্মকর্তারা খাদ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের গুদামে এখনো বহাল তবিয়তে বড় বড় চেয়ার দখল করে আছে, ৫ই আগস্টের আগ পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীরদের প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েও এখনো পার পেয়ে যাচ্ছে অদৃশ্য ছায়ায়। দশ মাস পার হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। সেসব কর্মকর্তারা বেশিরভাগই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডার বাহিনী থেকে উঠে আসা বলে অভিযোগ রয়েছে। 

গত ১৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে খুলনা মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা বিভাগের পক্ষ থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর ১৬ জন খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে এবং তাদের সাথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত থাকার প্রমাণ সহ এমপি মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে অফিসগুলো হাতের মুঠোয় রেখে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করার অভিযোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেন। অভিযুক্তরা ভার্সিটি ও কলেজে থাকাকালীন কলেজ ছাত্রলীগের ক্যাডার বলেও উল্লেখ করা রয়েছে। 

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক  মো: আল্-ওয়াজিউর রহমানকে প্রধান করে যশোর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ও ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শিহাব হোসেনসহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ভার দেয়া হয়। খুলনা বিভাগীয় অফিস কর্তৃক তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

জানা গেছে প্রায় তিন মাস আগে কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে অভিযুক্তদের শুনানির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল ওয়াজিউর রহমানকে। কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হলেও তদন্তের বিষয়ে এখনো কোন অগ্রগতি নেই বলে জানা গেছে, তিন মাস পর মে মাসের মাঝামাঝিতে তদন্তের কাজ শুরু করেন এই কর্মকর্তা, অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ দোসরদের পুনরায় সু সংগঠিত করে দেশকে আবার অস্থিতিশীল করে তুলতে এ ধরনের তদন্ত চলছে।

নাম প্রকাশ না করার সত্তে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডার ওই ১৬ জন কর্মকর্তা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, এমপি মন্ত্রীদের হাত তাদের মাথার উপরে থাকায় তারা অফিসের সকল প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়ম করে কাজ করতেন কারোর মুখ খোলার সাহস ছিল না তাদের বিরুদ্ধে, এছাড়াও বদলি বাণিজ্য ছিল তাদের অন্যতম ব্যবসা। এতকিছুর পরেও দশ মাস হয়ে গেল তবুও তারা বড় বড় চেয়ার দখল করে আছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিল এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা বিভাগের লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ৫ ই আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের সময় এ সকল চাকরিজীবীদের মধ্যে অনেকেই ছাত্র আন্দোলনকে কটাক্ষ করে এবং ছাত্র হত্যায় মদদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে। আবার ৫ আগস্ট এর পর তারাই পোস্টগুলো ডিলিট করে দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না  তারা ধীরে ধীরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে। খাদ্য বিভাগের নিরীহ ও নির্দলীয় চাকুরীজীবীরা মনে করেন যে, অতি দ্রুত এ সকল আওয়ামী দোসর ও ছাত্র-জনতা হত্যার সমর্থনকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা আবার সাধন চন্দ্র মজুমদার (সাবেক খাদ্য মন্ত্রী) সিন্ডিকেট চালু করে ঊর্ধ্বতনদের জিম্মি করে বদলি বাণিজ্য চালু করবে ও দুর্নীতি উন্মুক্ত করবে। 

খুলনা বিভাগের ১৬ জন কর্মকর্তা কর্মচারীদের নাম, পরিচয়, অতীত কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক অবস্থান উল্লেখ করেছেন সেগুলো হল : ১. আশরাফুজ্জামান সোহাগ ( উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তালা, কালারোয়া। সেই খুলনা বিএল কলেজের হল শাখার ছাত্রলীগ নেতা, আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় এবং প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম টাইম করাই ছিল তার প্রধান কাজ বলে উল্লেখ রয়েছে। 
২. মো: রবিউল ইসলাম রবি ( ওসএসএসডি ঝিনাইদহ সদর) সে খুলনা খান জাহান আলী থানার সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, এবং খুলনার ৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর মুন্নুজান সুফিয়ানের ঘনিষ্ঠজন ও ভাতিজা হিসেবে পরিচিত।  
৩. মো : আক্তারুজ্জামান ( খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওসেসলএসডি ডুমুরিয়া)  সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়েছে কোটি কোটি টাকা, খুলনা শহরে তার রয়েছে ছয় তলা বিশিষ্ট বাড়ি এবং ব্যক্তিগত গাড়ি যার নাম্বার এক্স করোলা ঢাকা মেট্রো গ-২৯৬৪৭৪।
৪. আব্দুস সবহান সরদার ( উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বর্তমানে সহকারি নিয়ন্ত্রক, এসি মংলাই কর্মরত) সে বিএল কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী। 
৫. মো: কাওসার আলী ( উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিতলমারি)  খাদ্য বিভাগে গুঞ্জন রয়েছে প্রশ্ন পাস কোথায় ও ভূয়া ঠিকানায় চাকরিপ্রাপ্ত। 
৬. অনিন্দ্য কুমার দাস (উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দাকোপ) বিএল কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদারের আত্মীয় পরিচয় দান করে ৫/৭ বছর ব্যপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অবৈধ উপার্জন করেছে। খুলনায় বিভিন্ন জায়গায় তার নামে বেনামের সম্পদের পাহাড় রয়েছে। 
৭.বাদল কুমার বিশ্বাস (উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাটিয়াঘাটা অতিরিক্ত দায়িত্বে সরকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক খুলনা) ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল এবং সাবেক খাদ্য মন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বর্তমান বিপ্লবী সরকারের জন তীব্র সমালোচক, এই কর্মকর্তা অত্যান্ত  দুর্নীতিবাজ ও অসাদাচরী।
৮.রাশেদ আহম্মেদ আল রিপন (খুলনা মহানগরী খাদ্য নিয়ন্ত্রক) আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত ও সাবেক ছাত্রলীগের ক্যাডার জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানবিরোধী আওয়ামী লীগের দোসর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন তীব্র সমালোচক কর্মক্ষেত্রে সে একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। 
৯. ইসমাইল আদম (খাদ্য পরিদর্শক ও ওসএলএসডি   বর্তমান খুলনাতে কর্মরত আছো।  আওয়ামী মুক্তিয