মিরপুর বিআরটিএ: দালালচক্র ও ঘুষে জর্জরিত জনসেবা ব্যবস্থা

মাফিজুল ইসলাম বন্ধন
মিরপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য সেবা নিতে গিয়ে হয়রানি, অতিরিক্ত টাকা না দিলে হয় না কোনো কাজ ঢাকা, মিরপুর: মিরপুরে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশনসহ নানা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু এই সরকারি অফিসটি এখন ঘুষ, হয়রানি ও দালালচক্রের জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে।
নিয়ম মানলেও মিলছে না সেবা ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেও দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার পরেও বারবার ফাইল 'হারিয়ে যাওয়ার' অজুহাত দেখিয়ে নতুন করে আবেদন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা সরাসরি সহযোগিতা না করায় অনেকেই দালালের দ্বারস্থ হন।
দালালের মাধ্যমে ‘বিদ্যুৎগতিতে’ লাইসেন্স! তিন মাসে লাইসেন্স পাওয়ার কথা থাকলেও দালালের মাধ্যমে মাত্র কয়েক দিনেই তা মিলছে। অবশ্যই তার জন্য গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। দালালের মাধ্যমে কাজ করলেই হয়রানি নেই, দেরিও নেই। আর এ চক্রের নেপথ্যে রয়েছেন কিছু অসাধু কর্মকর্তা।
অফিস চত্বরে দালালের ‘অঘোষিত দখল’ বিআরটিএ মিরপুর অফিসে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে দালালদের সরব উপস্থিতি। নতুন, বিভ্রান্ত বা তাড়াহুড়ায় থাকা গ্রাহকদের টার্গেট করে তারা ‘সহযোগিতার’ প্রস্তাব দেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনেক দালালেরই অফিসের ভেতরে রয়েছে বিশেষ যোগাযোগ।
‘দালালদের পেছনে রাজনৈতিক ছত্রছায়া’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চাই নিয়মে সবকিছু চলুক। কিন্তু দালালদের পেছনে রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে যায়।”
ডিজিটাল ব্যবস্থাও অসহায়! বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করলেও দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। কারণ, এখনো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ‘মানব হস্তক্ষেপ’ কমেনি। ফলে নাগরিকদের হয়রানি কমেনি বরং বেড়েছে।
প্রয়োজন কঠোর আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা বিশেষজ্ঞদের মতে, বিআরটিএ অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে সাধারণ নাগরিকরা ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। দালালচক্র ও অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, এবং কার্যকর ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করাই হতে পারে একমাত্র সমাধান।