মোবাইল অপারেটরদের নিজস্ব ফাইবার অপসারণে বিটিআরসি’র নির্দেশ!

নিজস্ব খরচে তৈরি করা ফাইবার নেটওয়ার্ক এবার গুটিয়ে নিতে হচ্ছে মোবাইল অপারেটরদের। তবে চাইলেই কিনতে পারবে ফাইবার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, ইন্টারনেট সেবার মান বাড়াতে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র আমদানিতে মোবাইল অপারেটরদের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। তাই ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক আর রাখতে পারবে না তারা। যদিও কমিশনের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে মোবাইল অপারেটররা। মোবাইলে ভিডিও স্ট্রিমিং কন্টেন্ট দেখতে সর্বোচ্চ পাঁচ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ দরকার হয়। ফাইবারযুক্ত টাওয়ারে গ্রাহকের অবস্থান থাকলে সহজেই নির্ধারিত গতি পাওয়া যায়। তবে ফাইবার না থাকলে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ সব সময় মেলে না। ফলে খারাপ হয় সেবার মান।
নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতে দেশজুড়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং ছয়টি এনটিটিএন অপারেটর মিলিয়ে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪১৭ কিলোমিটার ফাইবার নেটওয়ার্ক রয়েছে। এর বাইরেও মোবাইল অপারেটরদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে ৮ হাজার ২২১ কিলোমিটার।বর্তমানে টেলিযোগাযোগ খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিটিআরসির খসড়া আইনে বলা হয়েছে, মোবাইল অপারটেররা শুধু ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে। আর ব্যান্ডউইথ সঞ্চালনে ফাইবার সেবা দিবে লাইসেন্সধারী এনটিটিএন কোম্পানি।তবে এসব কোম্পানি থেকে ডার্ক ফাইবার ভাড়া নিতে পারবে মোবাইল অপারেটররা। তাই মোবাইল অপারেটরদের কাছে ফাইবার নেটওয়ার্ক থাকার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে বিটিআরসি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, এক থেকে দেড় বছর সময় দেয়া হবে। এরপর থেকে মোবাইল অপারেটররা কোনো ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক কিনতে পারবে না। ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক দেবে লাইসেন্সধারী এনটিটিএন কোম্পানি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সামিট এবং ফাইবার অ্যাট হোম। ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক বলেন, অপারেটররা চাইলে নেটওয়ার্ক অধিগ্রহণে ফাইবার অ্যাট হোম প্রস্তুত রয়েছে।মোবাইল অপারেটররা বলছে, বেসরকারি বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা ও উৎসাহিতকরণ আইন ১৯৮০ এর বিভিন্ন ধারা বলে বিনিয়োগ করা অবকাঠামো বাজেয়াপ্ত বা গুটিয়ে নেয়ার সুযোগ নেই। এই আইনে বেসরকারি বিদেশি বিনিয়োগের প্রতি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত আচরণের এবং এর পূর্ণ সুরক্ষা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে বলা হয়েছে।রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, আইনগত কিছু জটিলতা রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে। এটি কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে সেটি বিবেচনা করতে হবে।বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, বিষয়টি এমন হওয়া উচিত যে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক নিজেরাও নিতে পারব। আবার অন্যদের থেকেও কিনতে পারব। উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৮ কোটির বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে চার মোবাইল অপারেটর।