বিশ্বের সেরা ১০ কারখানার ৯টিই বাংলাদেশে, আরো ৪টি পেল ‘লিড’ সনদ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের যাত্রা আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। দেশের আরো চারটি পোশাক কারখানা সম্প্রতি বিশ্বের স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব সনদ ‘লিড’ অর্জন করেছে। এর চেয়েও বড় সুখবর হচ্ছে — বিশ্বের সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত ১০টি ‘লিড’ (লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন) সনদপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে ৯টিই এখন বাংলাদেশে। এর ফলে বাংলাদেশে লিড সনদপ্রাপ্ত গার্মেন্টস কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৮টিতে। এর মধ্যে ১০৫টি কারখানা পেয়েছে প্লাটিনাম এবং ১২৯টি পেয়েছে গোল্ড সনদ।জানা গেছে, নতুন যে চারটি কারখানা এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে তার মধ্যে রয়েছে মানিকগঞ্জের ফুকুরিয়ায় অবস্থিত অ্যাডভান্স অ্যাটায়ার লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ‘লিড বিডি+সি : নতুন নির্মাণ (সংস্করণ ৩ – লিড ২০০৯)’ ক্যাটাগরিতে ৯৬ পয়েন্ট অর্জন করে প্লাটিনাম সনদ লাভ করেছে।নরসিংদীর পাঁচদোনায় অবস্থিত আমানত শাহ ফেব্রিকস লিমিটেড (ওভেন কম্পোজিট ইউনিট) অর্জন করেছে ‘লিড ও+এম : বিদ্যমান ভবন (সংস্করণ ৪.১)’ ক্যাটাগরির প্লাটিনাম সনদ, যেখানে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে ৮২ পয়েন্ট।গাজীপুরের টঙ্গীর রাজনগরে অবস্থিত কটন ফিল্ড বিডি লিমিটেড (প্রোডাকশন বিল্ডিং), ‘লিড বিডি+সি : নতুন নির্মাণ (সংস্করণ ৪)’ ক্যাটাগরিতে ৮৩ পয়েন্ট অর্জন করে প্লাটিনাম স্বীকৃতি পেয়েছে।চতুর্থ কারখানাটি হলো ঢাকার উত্তরখানের চানপাড়ায় অবস্থিত কেএম অ্যাপারেল নিট প্রাইভেট লিমিটেড। এটি ‘লিড বিডি+সি : নতুন নির্মাণ (সংস্করণ ৪)’ ক্যাটাগরিতে ৬২ পয়েন্ট অর্জন করে গোল্ড সনদ লাভ করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অর্জন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত লিড কারখানার মধ্যে ৯টিই যেমন বাংলাদেশে তেমনি পাশাপাশি শীর্ষ ১০০টি লিড কারখানার মধ্যে ৬৮টিই বাংলাদেশি। ফলে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শিল্প উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। বাংলাদেশ এখন সবুজ শিল্প স্থাপনায় বিশ্বে উদাহরণ তৈরি করছে। এই স্বীকৃতি আমাদের পোশাক শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরো প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।তিনি আরো বলেন, লিড সনদ পাওয়া মানে শুধু পরিবেশ রক্ষা নয় বরং এর মাধ্যমে কারখানাগুলো শক্তি ও পানি সাশ্রয়, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা যেমন বাড়ে, তেমনি বাংলাদেশও একটি টেকসই উৎপাদনের গন্তব্য হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরো দৃঢ় করে তোলে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।